নিউজডেস্কঃ
যেকোন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পায়রা ফোরলেনের সেতু। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত সেতুটি একদিকে যেমন দক্ষিনাঞ্চলবাসীকে স্বপ্নের হাতছানি দিচ্ছে অপরদিকে অতিরিক্ত টোল নির্ধারনে পরিবহন ব্যবসায়ীদের হতাশ করছে। এ অবস্থায় হয় টোল পূননির্ধারণ নাহয় যাত্রীদের বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবী তুলছেন মালিক পক্ষ।
পায়রা সেতু প্রকল্প অফিস সুত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালীর লেবুখালী নদীর উপর পায়রা সেতু নির্মানে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার চারশত ৪৭কোটি টাকা। যার ৮২ ভাগ অর্থ বহন করছে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট এবং এপেক ফান্ড। ২০১৬সালের ২৪শে জুলাই শুরু হওয়া এ সেতুর ইতিমধ্যে ৯৯ভাগ কাজ সম্পন্ন। ১হাজার চারশত ৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯দশমিক ৭৬মিটার প্রস্থের সেতুর উভয়পাড়ে প্রায় সাত কিলোমিটার এপ্রোচ সড়ক রয়েছে। নদী শাসনের কাজও প্রায় সম্পন্ন।
পায়রা সেতু পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হবে এবং তখনই যান চলাচলের জন্য খুলে দেযা হবে। যেকোন মুহুর্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করতে পারেন। তিনি বলেন সেই লক্ষ্যে এখন চলছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর সেতুটি সড়ক যোগাযোগে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। এরফলে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে আর কোন ফেরি থাকছেনা। স্বল্প সময়ে বরিশাল টু কুয়াকাটা ভায়া পটুয়াখালী যাতায়াতে সহজতর হবে। তিনি জানান, বরিশাল বিভাগের মধ্যে এত বড় সৌন্দর্যমন্ডিত সেতু দ্বিতীয়টি আর নাই। ইতিমধ্যে অনেক ভ্রমনপিপাসু মানুষ সেতুটি দেখতে এখানে জড়ো হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তিনি বলেন, সেতুটি চালু হলে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী আসতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে মাত্র এক ঘন্টা। আর মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘন্টায় বরিশাল থেকে কুয়াকাটায় যাওয়া যাবে।
পর্যটনসহ জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব
এই সেতুর পাশাপাশি পদ্মাসেতু চালু হলে ঢাকা টু কুয়াকাটা ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগে নবদিগন্ত সূচনা হবে বলে মনে করেন পটুযাখালী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, সেতুটি চালু হলে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্র বন্দর, ১৩২০ মেঘাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইপিজেডে ব্যপক পরিবর্তন ঘটবে। এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ দেশের অর্থনীতিতে সেতুটি ব্যপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি জানান, ঢাকা থেকে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টায় কুয়াকাটায় আসা যাবে। তখন অনেকেই সকালে রওয়ানা হয়ে কুয়াকাটা এসে বিকালে আবার ঢাকায় ফিরে যেতে পারবে। যার ফলে কক্সবাজারের তুলনায় কুয়াকাটা হবে তখন হটস্পট। এরফলে পর্যটনখাতেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। দেশের বড় বড় শিল্পউদ্যোক্তরা তখন হুমরী খায়ে পরবে এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য। কারণ পায়রা সমুদ্র বন্দর পূর্নাঙ্গভাবে চালু হলে এখান থেকে সড়ক পথে এত স্বল্প সময়ে ঢাকাসহ সারাদেশে পন্য আনা নেয়া অনেক সহজ হবে। যেটি দেশের অন্য দুটি বন্দরে সম্ভব না।
পায়রা সেতু প্রকল্পের ৭ম পরিচালক আবদুল হালিম জানান, সেতুর নির্মাণ কাজ ৯৯ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া উদ্বোধনের আগেই সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, নদী শাসনের ৮৮ভাগ কাজ প্রায় সম্পন্ন। বাকি কাজ শেষ করতে সেতু উদ্বোধনে কোন প্রভাব পরবেনা।
সময় লাগল সাড়ে ৯ বছর
২০১২ সালের মে মাসে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পটুয়াখালীর লেবুখালী নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রকল্পে অনুমোদন দেয় সরকার। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মিত প্রকল্পটি ৪১৩ দশমিক ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু, গত সাড়ে ৯ বছরে এ প্রকল্পের ব্যয় মোট ৩ বার সংশোধন করে দুইবার সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এবং প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন করা হয়েছে মোট ৬ বার। যার ফলে এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাড়িয়েছে ১ হাজার ৪শ’ ৪৭ কোটি টাকায়। যা আনুমানিক মূল ব্যয়ের প্রায় সাড়ে ৩ গুণেরও বেশি। দুই বছরের ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ডসহ সংশোধিত মেয়াদ দাড়িয়েছে এখন ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড মানে, প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার দুই বছরের মধ্যে যদি নির্মাণে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায় তবে তা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা নিজ খরচে ঠিক করে দিবেন। প্রকল্পের ভৌত কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে ডিফেক্ট লায়াবিলিটির মেয়াদ শুরু হবে।
এত বিলম্ব কেন?
প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হালিমের মতে, প্রাথমিকভাবে একটি ধারণাগত নকশার ভিত্তিতে প্রকল্প ব্যয় অনুমান করা হয়েছিল। পরে বিস্তারিত নকশা অনুসারে প্রকৃত নির্মাণ ব্যয় চূড়ান্ত করা হয়।
এরপর পাইলসের নকশা পরিবর্তন এবং ১৩০ মিটার লম্বা পাইলস খাড়া করতে হয়, তখনও ব্যয় বেড়ে যায়।
পিডির মতে, কোভিড-১৯ এ সেতু নির্মান কাজের গতিকে ধীর করে দেয়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি চীনের এবং অনেক উপকরণ চীন থেকেই সংগ্রহ করতে হয়েছে। এটিও প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ার একটি অন্যতম কারণ বলে তিনি মনে করেন।
ফেরির তুলনায় সেতুর ৭গুন টোল নির্ধারণ
২০১৩সালের ১৯মার্চ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনকৃত এ সেতুটি নির্মানের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দার উম্মুক্ত হচ্ছে সর্বদক্ষিনে। কিন্তু এই সেতুর টোল নির্ধারণ নিয়ে পরিবহন সেক্টরসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১৮মার্চ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের (টোল অধিশাখা) উপসচিব ফাহমিদা হক খান স্বাক্ষরিত এক গেজেটে সেতুটির টোল নির্ধারণ করা হয়। এতে পায়রা সেতুতে ট্রেইলার ৯শ’ ৪০টাকা, হেভি ট্রাক ৭শ’ ৫০টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৩শ’ ৭৫টাকা, বড় বাস ৩শ’ ৪০টাকা, মিনি ট্রাক ২শ’ ৮০টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত যান ২শ’ ২৫টাকা, মিনিবাস-কোস্টার ১শ’ ৯০টাকা, মাইক্রোবাস ১শ’ ৫০টাকা, ফোর হুইল চালিত যানবাহন ১শ’ ৫০টাকা, সেডান কার ৯৫টাকা, ৩-৪ চাকার যান ৪০টাকা, মোটরসাইকেল ২০টাকা, রিকশা, ভ্যান, সাইকেল, ঠেলাগাড়ি ১০টাকা হারে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।
অথচ ওই সেতুর নীচে লেবুখালী নদী পারাপারে ফেরী ভাড়া মোটরসাইকেল ৫টাকা, প্রাইভেটকার ৪০টাকা, যাত্রীবাহী বাস ৫০টাকা, বড় ট্রাক ২৫০টাকা আদায় করা হতো। কিন্তু ফেরী পারাপারে যাত্রীবাহি বাসের ভাড়ার তুলনায় সেতুর টোল নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৭গুন বেশি। এত বেশি ভাড়া কেন নির্ধারণ করা হয়েছে তার সঠিক কোন কারণ জানা নাই কারও।
টোল নির্ধারণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগে তোলপাড়
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজিবুল রাজ নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, পায়রা সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০টাকা। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এটিকে পুরোপুরি অযৌক্তিক বলে মনে করি। সকলের/সব মহলের উচিত এটা নিয়ে সরব হওয়া। এটি পুন:র্বিবেচনা করার অনুরোধ করছি। তারেক মলিক নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে লিখেছেন, আগে লেবুখালী ফেরীতে দিতাম ৫টাকা, এখন ব্রিজে দিতে হবে ২০টাকা, আমি আবার ফেরী চাই, নয়তো টোল ১০টাকা করতে হবে। না হয় এইটা নিয়ে অনেক কিছু হবে, বলে রাখলাম। আমাদের দাবি একটাই মোটরবাইকেল টোল ১০ টাকার মধ্যে চাই। আর.আই.এম অহিদুজ্জামান ফেসবুকে লিখেছেন, লেবুখালী সেতু অবশ্যই সরকারের একটি বড় অর্জন! কিন্তু এর টোল নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। সব যানবাহনেই টোল বেশি মনে হচ্ছে। নিশ্চয়ই এটা জনগণের পকেট থেকে যাবে। কারণ পরিবহণ ওয়ালারা ভাড়া বৃদ্ধি করে দিবে। আর মোটরসাইকেল ফেরীতে পাড় হতাম ৫পাঁচ টাকায়, সেতুতে ২০ টাকা। এটা রীতিমতো জুলুম। আসুন আমরা লেবুখালী টোল পুন:নির্ধারণের দাবী জানাই….।
সরেজমিনে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে একাধিক গাড়ীর চালকসহ স্থানীয়দের। বরিশাল টু পটুয়াখালী সড়কে যাত্রীবাহি বাস চালক আলমগীর হোসেন জানান, ৫২সিটের আমার এই গাড়ীতে দেখেন যাত্রী আছে মাত্র ২৫জন। তাও আবার সবাই বরিশালে যাবেনা। পথিমধ্যে কয়েকটি স্টেশনে নেমে যাবে আট জন। ১৭জনকে নিয়ে আমার বরিশালে যেতে হবে। প্রায় সময়েই যাত্রীর সংখ্যা এরকমই হয়। মাঝে মধ্যে ফুল সিট হয়। তবে মেক্সিম্যাম সময়ে সিট খালি থাহে। তিনি জানান, সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ৮০টাকা হারে আদায় করলে আমি পাচ্ছি এক হাজার তিনশ টাকা। এখন আসেন খরচের হিসাবে। পটুয়াখালী থেকে বরিশাল মাত্র ৪০কিলোমিটার পথ। এই ৪০কিলোমিটার পথে টোল আছে তিনটি। পটুয়াখালী সেতুতে দিতে হয় ৫০ টাকা, পায়রা সেতুতে দিতে হবে ৩৪০টাকা আর দফদপিয়া সেতুতে দিই ৫০টাকা। এর সাথে পটুয়াখালী আর বরিশাল স্টান্ডে দুই জেলার মালিক সমিতি আর শ্রমিক সংগঠনকে দিতে হয় ৫০ করে একশ টাকা। তারপর আছে ত্যাল খরচ আর আমাগো টুকিটাকি নাস্তা। সবমিলিয়ে ৬৪০টাকা খরচ হয় একবার যেতে। আবার ফিরে আসলে যাত্রী থাক বা না থাক ওই ৬৪০টাকা আমাকে দিতেই হবে। ২৪ ঘন্টায় আমরা দুটি বা তিনটি ট্রিপ মারতে পারি। কিন্তু তাতে মালিকের আসলে কিছুই থাকেনা। এমনিতেই মহাসড়কে ভাড়ায় মোটরসাইকেল, অটোবাইক, ইজিবাইক, সিএনজিতে অনেক প্যাসেঞ্জার যাতায়াত করে। আলমগীর জানান, আমরা প্রতিটি ট্রিপে যদি অর্ধেক ফুল যাত্রীও পেতাম তাহলেও কোন সমস্যা ছিলনা। দেশের অন্য কোন সেতুতে এত বেশি পরিমান টোল আছে কিনা আমি জানিনা। আমি মনে করি ফেরি ভাড়ার দ্বিগুনও যদি করে তাহলেও মোটামোটি চলে।
সেবাহান নামের ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক জানান, আগে ফেরিতে দিতাম ৫টাকা। পাগলার মোড় থেকে বরিশাল বা বাকেরগঞ্জ পর্যন্ত যাত্রী নিতাম গায়ে বাজতেনা কিন্তু এই ব্রীজে উঠলেই এহন ২০টাকা দিতে হবে। একশ টাকা কামায় করতে অনেক সময় লাগে। যাত্রীও পাওয়া যায়না। হ্যারমধ্যে যদি আসা যাওয়ায় ২০ করে ৪০ টাহা দিতে হয় তাহলেতো মোটরসাইকেল নিয়া অদিকে (বরিশালের দিকে) আর যাওন যাইবেনা।
জানতে চাইলে পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মৃধা জানান, যদি টোল পূননির্ধারণ করা না হয় সেক্ষেত্রে বরিশাল টু পটুয়াখালী রুটের পরিবহন ব্যবসা বন্ধ হবারও আশংকা রয়েছে। কারণ লজ দিয়াতো রাস্তায় গাড়ী চালানো যাইবেনা। সরকার নির্ধারিত বরিশাল টু পটুয়াখালীর যে ভাড়া ৮০টাকা সেটি বাড়ানো হউক আর নাহয় টোল নির্ধারণ কমানো হউক। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেকোন সেতুর টোল নির্ধারনের আগে বাস মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে করা হয়ে থাকে কিন্তু আমাদের স্বপ্নের এই পায়ূরা সেতুর টোল নির্ধারণ কবে কিভাবে কারা নির্ধারণ করলো আমরা কিছুই জানিনা। তিনি বলেন, মাত্র ৪০কিলোমিটার পটুয়াখালী টু বরিশালের পথ। সেখানে তিনটি সেতুর টোল দিতে হয়। আগে লেবুখালি ফেরির যে ভাড়া ছিল মানে এখনও যে ভাড়া নেয়া হয় ফেরিতে তার সাতগুন বেশি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এই সেতুতে। এটাকিভাবে সম্ভব? এর প্রভাবতো পর্যটক খাতেও পরবে বলে আমি মনে করি। কারণ পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে মানুষজন যে বেড়াতে আসবে কুয়াকাটায় তাদেরতো টোল দিতে দিতেই সর্বশান্ত হবার মত অবস্থা দাড়াবে। তিনি বলেন, দেখেন যদি বরিশালের কথাই ধরেন যে, আপনি বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যাবেন সেক্ষেত্রে আপনাকে ছয়টি সেতুর টোল দিতে হবে। অর্থাৎ পাচটি সেতুর যে টোল তাও চেয়ে বেশি টোল দিতে হচ্ছে শুধু এই পায়রা সেতুতে। আর যদি ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ধরেন তাহলেতো আর কথাই নাই। তাই এখনও সময় আছে সরকার বা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ যারা আছে তাদের প্রতি আকুল আবেদন জানাই দক্ষিনাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পায়রা সেতুর টোল পূননির্ধারণ করা হউক। নইলে এটি আমাদের গলার কাটা হয়ে দাড়াবে। তিনি জানান, বিষয়টি পূননির্ধারনের জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে জানানও হয়েছে।
এ ব্যপারে সড়ক ও জনপথ বরিশাল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, ফেরী ও সেতুর টোলের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। সড়ক পরিবহন বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে টোল নির্ধারিত হয়ে থাকে। এতে আমাদের কোন হাত নেই।
একই কথা জানালেন পায়রা সেতু নির্মান প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবদুল হালিম। তার মতে, এটি দেখভার করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়। এখানে আমাদের কোন হাত নাই। সরকারের সিদ্বান্ত ওই মন্ত্রনালয় বাস্তবায়ন করছেন।
