পবিপ্রবি প্রতিনিধি
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ইউনিটে শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের নবগঠিত কমিটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউট্যাব (ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) পবিপ্রবি ইউনিটের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. মামুন অর রশীদ এবং সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়—দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে।
এই সংবাদ প্রকাশের পরপরই বিষয়টি শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তরের নজরে আসে। এ বিষয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. আনিসুর রহমান আনিস এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক তালুকদার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “ইউট্যাব পবিপ্রবি শাখার এ ধরনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ এখতিয়ারবহির্ভূত, বেআইনি ও অগণতান্ত্রিক। এটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন ও মুক্ত চিন্তার চর্চার পরিপন্থী।”
তাঁরা আরও বলেন, “গুটিকয়েক স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির এমন অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিকর উদ্যোগ জাতীয়তাবাদী শিক্ষাবিদ সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করবে। একই সঙ্গে দলীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ জনগণ বিভ্রান্ত হবে।”
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মতে, ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মরহুম প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদ গত ২৮ বছর ধরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রচিন্তা, গণতান্ত্রিক আদর্শ ও জাতীয়তাবাদী দর্শন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে আসছে। সংগঠনটি নিয়মিতভাবে সেমিনার, প্রকাশনা ও মুক্তচিন্তার চর্চার পাশাপাশি বিএনপি ঘোষিত বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে আসছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “পবিপ্রবিতে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার পরিপন্থী এমন ঘৃণ্য সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ কোনোভাবেই এ ধরনের অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ মেনে নেবে না।”
এ সময়ে নেতৃবৃন্দ স্মরণ করিয়ে দেন, জিয়া গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ ইতিপূর্বে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা পরিষদের বিভিন্ন গ্রন্থ ও প্রকাশনা দেশনেত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন। এছাড়া ২০১৪ সালের অবরোধকালীন আন্দোলনে “ফ্যাসিস্ট সরকার” কর্তৃক দায়েরকৃত অসংখ্য মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ কারাবাসের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন।
প্রতিবাদ লিপিতে পরিষদের পক্ষ থেকে ইউট্যাব পবিপ্রবি শাখার নেতৃবৃন্দকে প্রশ্ন রেখে বলা হয়—“বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা কারাবরণ করেছি, মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছি, দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় থেকেছি। অথচ আপনারা কি একদিনের জন্যও কারাবরণ করেছেন? কিংবা অন্তত একটি মিথ্যা মামলার আসামিও হয়েছেন?”
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শেষ পর্যন্ত পবিপ্রবি ইউনিটের এ ধরনের ‘অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত’ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
