ঘুষ, চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর ভূমি কার্যালয়ের সহকারী তহশিলদার জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে গতকাল সোমবার ওই লিখিত অভিযোগ দেন একাধিক ভুক্তভোগী।
এর আগে গত রোববার জাহিদুল ইসলামকে দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত পেতে উপজেলা সদর ভূমি কার্যালয় ঘেরাও করেছিলেন ২৫ থেকে ৩০ জন ভুক্তভোগী। এ ছাড়া গত বুধবার রাতে ঘুষ নেওয়ার সময় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ছবি তুলতে গেলে জাহিদুল তাঁদের কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। ওই ঘটনায় সংবাদকর্মী মাহামুদ হাসান থানায় জাহিদুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
ইউএনওর কাছে দেওয়া ওই অভিযোগে কোড়ালিয়া এলাকার পারভীন বেগম বলেন, বিরোধীয় জমি নিষ্পত্তি করতে জাহিদুল তাঁর কাছে এক লাখ টাকা চান। তিনি জাহিদুলকে ৫০ হাজার টাকা দিলেও আজ পর্যন্ত তাঁর সমস্যার নিষ্পত্তি হয়নি এবং তিনি টাকাও ফেরত দেননি।
কোড়ালিয়ার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সরকার থেকে বন্দোবস্ত পাওয়া জমিতে তিনি মাছের ঘের করেন। বর্ষা মৌসুমে নদী পানি বেড়ে গেলে তিনি ভেকু দিয়ে মাটি কেটে মাছের ঘেরে নতুন বাঁধ দেওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ সময় জাহিদুল তাঁর কথিত পিএস আল আমিনকে পাঠিয়ে ভেকুর চাবি জব্দ করান। তাঁকে কার্যালয়ে ডেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে ভেকুর চাবি ফেরত দেন জাহিদুল।
কোড়ালিয়ার মো. ফারুক হোসেন অভিযোগে বলেন, সরকার থেকে বন্দোবস্ত পাওয়া জমিতে তিনি মাছের ঘের করে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার প্রস্তুতি নেন। এ সময় জাহিদুল মাটিকাটায় বাধা দিয়ে কয়েক দফায় তাঁর কাছ থেকে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নেন।
কোড়ালিয়ার গোলাম রাব্বী বলেন, খাসজমি বন্দোবস্ত পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ভূমি অফিসের দালাল মানিক মিয়ার মাধ্যমে জাহিদুল তাঁর কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে তাঁকে জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া ভেকু দিয়ে মাটি কাটার অনুমতি দেওয়ার জন্য জাহিদুল তাঁর কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করলে তিনি তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দেন। এখন বাকি টাকার জন্য তাঁকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
অভিযোগে শুক্কুর ফরাজি বলেন, একটি সরকারি খালের ইজারা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে জাহিদুল তাঁর কাছ থেকে আগাম পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ নেন।
ইউএনওর কার্যালয়ের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম জানান, ‘গতকাল আটজন ভুক্তভোগী ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি অভিযোগ লোকমাধ্যমে পাঠানোর কারণে সেটি তাঁরা গ্রহণ করেননি।’
ইউএনও রাজীব দাশ পুরকায়স্থ বলেন, ‘ওই সব লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরবর্তী পদক্ষেপ জেলা প্রশাসক স্যার নেবেন।’ (প্রথম আলোর সৌজন্যে )
