ঢাকাFriday , 27 June 2025
  1. কলাপাড়া
  2. কুয়াকাটা
  3. গলাচিপা
  4. দশমিনা
  5. দুমকি
  6. প‌বিপ্রবি
  7. বাউফল
  8. মির্জাগঞ্জ
  9. রাঙ্গাবালী
  10. সদর
  11. সারাদেশ

 ‘আগামী ৫০ বছরে ৩০ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুতের আশংকা ’

adminptk112233
June 27, 2025 3:06 pm
Link Copied!

নিউজডেস্কঃ

দেশের ১৯টি উপকূলীয় এলাকা ঘিরেই তৈরি হয়েছিল বিস্তীর্ণ যে অঞ্চল সেই অঞ্চলে মানুষের লোভের শিকার হয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসছে। সেই বিপর্যয় বিস্তীর্ণ উপকূলকে ধ্বংস করে বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক সংকটের মুখে ফেলেছে। যেই সংকটে আগামি ৩০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ূ উদ্বাস্তুর হারকে ৭ গুণ বাড়িয়ে দেবে। যে কারণে আগামি ৫০ বছরের মধ্যে আরও ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুভিটা ছেড়ে যেতে বাধ্য হবেন।

শনিবার সাগরকন্যা কুয়াকাটায় বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘উপকূলীয় নদী সম্মেলনে’ বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।

সম্মেলনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্পের পরিবেশ ও জলবায়ূ বিশেষজ্ঞ মো. মনির হোসেন চৌধুরী বলেন- নদী ভাঙ্গন, লবণাক্ততা, সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতাবৃদ্ধি, যত্রতত্র অবাধে অবকাঠামো নির্মাণ, নদীগুলোতে পলিপ্রবাহে মাত্রাতিরিক্ত বাধার সৃষ্টি, বাগদা চিংড়ি চাষ করতে অবাধে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাঁধ কেটে লবণপানি ঢোকানো, যথেচ্ছা মৎস্যশিকার, মাটির উর্বরা শক্তি হৃাস দেশের উপকূলীয় অঞ্চল, নদ-নদী ও উপকূলের মানুষ গুলোকে নিঃস্ব করে তুলছে।

তিনি বলেন, এসব কারণে মানুষ ঘর-বাড়ি, জমি হারিয়ে বাঁচার তাগিদে জন্মভিটার মায়া ছেড়ে শহরমুখী হতে বাধ্য হচ্ছেন। গণহারে বন ধ্বংস ও মাত্রাতিরিক্ত কার্বণ নিঃসরণে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে জমাট বরফ গলতে শুরু করেছে। সেই বরফগলা পানি মিশে ধীরে ধীরে সাগরের উচ্চতা বাড়ছে। যা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মতো সাগর তীরবর্তী দেশগুলোকে বিপদে ফেলে দিয়েছে।

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন বলেন- এখনও সময় শেষ হয়ে যায়নি। এখনই নদ-নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সময়। আমাদের উপকূলের মানুষগুলোকে বাঁচাতে হবে। রক্ষা করতে হবে আমাদের বিস্তীর্ণ উপকূল। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে নদী বাঁচাতে হবে। আর নদীকে বাঁচাতে হলে উপকূল রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে।

চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, দেশে চার ধরণের নদী রয়েছে। সেখানে দুই ধরণের নদী হলো উপকূলীয় নদী ও পাহাড়ি নদী। উপকূলীয় নদীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ হলেও নির্বিচারে চিংড়িঘেরের কারণে সেই নদীকেই ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি বলেন, উপকূলীয় নদী হলো সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্রের প্রজনন ক্ষেত্র। তাই উপকূল ও উপকূলীয় নদী রক্ষা করতে হবে।

জীবন ও প্রকৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, শুধু মাছ নয়, পাখিরও আধার হলো এই উপকূল। এই উপকূলই পাখিদের বিচরণ ভূমি। তিনি বলেন, উপকূল ভালো রাখতে হলে একসাথে মিলে মিশে কাজ করতে হবে।

তাঁর মতে, প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু ক্ষমতা আছে। সেই ক্ষমতার সাথে কিছুটা মমতা মিশিয়ে কাজ করলেই দেশটা ভালো থাকবে। নতুন প্রজন্মকে পরিবেশ রক্ষায় মেসেজ পৌঁছে দিতে হবে। তা ঘর থেকেই শুরু করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে মাটির সাথে পদচারণা করাতে হবে। যা এখন হচ্ছে না। তরুণ প্রজন্ম এখন মোবাইল প্রযুক্তি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের ফেরাতে হবে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার ভার্চয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, বাংলাদেশ সরকার দেশের প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় রক্ষা করতে অত্যন্ত আন্তরিক। সরকার ২০৩০ সালকে সামনে রেখে কাজ করছে। বর্তমান সরকার প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আগামি ১০০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদ, দূর্যোগ মোকাবেলা, নদী রক্ষা করতে মাঠে ময়দানে কর্মী বাহিনী তৈরি করে একসাথে কাজ করতে হবে।

তাঁর মতে, সরকার পরিবেশ রক্ষায় এতো বেশি আন্তরিক যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নিজের দলের নেতা-কর্মীদেরও কখনও ছাড় দেন না।

‘বাঁচাও উপকূল, ফেরাও সম্ভাবনা’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উপকূলীয় নদী সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্প, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস জয়েন্ট কো-অপারেশন প্রোগ্রাম, রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি), পরিবেশ ও নদী রক্ষা ফাউন্ডেশন ও গ্রীণ প্ল্যানেট। 

প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়াটার কিপার বাংলাাদেশ এর সমন্বয়কারি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল ও রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ।

শনিবার দিনভর চলা উপকূলীয় নদী সম্মেলনের উদ্বোধনী ও একাডেমিক সেশনে পরিবেশ রক্ষায় আগামি ১০০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে ‘ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ নিয়ে বিষদ আলোচনা করেন ৫ জনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল। এদের মধ্যে মূল আলোচনায় ছিলেন জেপিসি, বাংলাদেশ-ন্যাদারল্যান্ড এর প্রিন্সিপাল স্পেশালিষ্ট মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র স্পেশালিষ্ট ড. ফারহানা আহমেদ, এসোসিয়েটস স্পেশালিষ্ট কে এইচ রাজিবুল করিম, রিসার্স কনসালটেন্ট এটিএম সাইদুল কবির ও রিসার্স কনসালটেন্ট চম্পা রাণী সাহা।

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।