ঢাকাThursday , 26 June 2025
  1. কলাপাড়া
  2. কুয়াকাটা
  3. গলাচিপা
  4. দশমিনা
  5. দুমকি
  6. প‌বিপ্রবি
  7. বাউফল
  8. মির্জাগঞ্জ
  9. রাঙ্গাবালী
  10. সদর
  11. সারাদেশ

ভেঙে ফেলা হলো পাগলার যুদ্ধবিমানটি

adminptk112233
June 26, 2025 7:57 am
Link Copied!

নিউজডেস্কঃ

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের ইউনিভার্সিটি স্কয়ারে স্থাপিত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)’র দিক নির্দেশক স্মারক বিমানটি (মনুমেন্ট) ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় নির্মানাধীন লেবুখালী নদীর উপরে পায়রা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণে নিয়োজিত মাটি কাটার যন্ত্র (এক্সাভেটর) দিয়ে এটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা এতে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পবিপ্রবি ও লেবুখালী এলাকায় পায়রা নদীর ওপর চলমান পায়রা সেতু প্রকল্প কর্মকর্তারা এজন্য পরস্পরকে দুষছেন।

এদিকে রবিবার দুপুরে পবিপ্রবি’র ভারপ্রাপ্ত ভিসি ড. স্বদেশ সামন্ত, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরি, শেখ হাসিনা সেনানিবাসের জিওসি, বিমান বাহিনীর গ্রপ ক্যাপটেন জিএম আলী হায়দার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় জেলা প্রশাসন জানান, এটি সংস্কার করতঃ পুনস্থাপন করার সম্ভাব্যতা নিরুপনের লক্ষ্যে বিমান বাহিনীর তিনজন সদস্যের একটি টিম কাজ শুরু করেছেন।

পবিপ্রবি সূত্র জানিয়েছে, ২০০৩ সালের দিকে বিমান বাহিনী থেকে অকেজো এফ-৬ বিমানটি পবিপ্রবি কর্তৃপক্ষকে উপহার হিসেবে দেয়া হলে সেটি বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাগলার মোড় এলাকায় দিক নির্দেশক হিসেবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ ইউনিভার্সিটি স্কয়ার থেকে পবিপ্রবি’র মূল ক্যাম্পাসটি ৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত এবং এ মহাসড়ক থেকে মূল ক্যাম্পাসের দিক নির্দেশক হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর ‘পাগলার  মোড়’ এলাকার নাম পরিবর্তন হয়ে ইউনিভার্সিটি নামকরন হয়। তৎকালীন স্বরাষ্টমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল অবঃ আলতাফ হোসেন চৌধুরী এটি নির্মিত করেন।

তিনি জানান, বিমান বাহিনীর নিজস্ব খরচে এবং জনবল দিয়ে বিমান বাহিনীর সদর দপ্তর থেকে এ বিমানটি এখানে প্রতিস্থাপন করা হয়। তিনি বলেন, বিমানের সাথে পরিচিতি করার জন্য বিজ্ঞান মনস্ক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর জন্য স্থাপিত এ বিমানটি অন্য কোথাও স্থাপন করা গেলে এতদঞ্চলের শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষ উপকৃত হতেন।

লেবুখালী সেতুর প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুল হালিম জানান, লেবুখালী এলাকায় পায়রা নদীর ওপর নির্মানাধীন পায়রা সেতুর পটুয়াখালী প্রান্তের এপ্রোচ সড়কের নির্মাণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোয়ারে প্রতিস্থাপিত স্মারক যুদ্ধবিমানটি অপসারনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২০২০ সালের অক্টোবর মাস থেকে একাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পটুয়াখালী সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির সাথে দেখা করেও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদের সাথে ৩ বার কথা বলেছি, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়  কর্তৃপক্ষ এটি সরানোর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় সড়কের এপ্রোচ নির্মাণ করতে যেয়ে ঠিকাদারি কাজে নিয়োজিত লোকজন কাজ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পবিপ্রবি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও রেজিষ্ট্রার অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত জানান, বিশ্ববিদ্যালয় স্কোয়ারে স্থাপিত যুদ্ধবিমানটি সরানোর জন্য আমাদেরকে একাধিকার চিঠি দেয়া হয়েছিল কিন্তু ওটি অপসারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সক্ষমতা না থাকায় আমরা এ বিষয়ে বিমান বাহিনীর সদর দপ্তর চিঠি দিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কোন অগ্রগতি হয়নি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনার দিন না জানিয়েই হঠাৎ করে মনুমেনইট ভেঙে ফেলায় তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি।

তিনি আরো জানান, জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ মনুমেন্টটি মেরামত করে পূনঃস্থাপন করা যায় কিনা তা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে স্থাপনাটিতে থাকা স্মারক যুদ্ধবিমানটি ভেঙে নষ্ট করে ফেলায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনসাধারণ। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ চলছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থীরা জানান, নির্দেশক স্তম্ভটিতে থাকা স্মারক যুদ্ধবিমানটি ভেঙ্গে না ফেলে যদি সুরক্ষিত অবস্থায় অপসারণ করা হতো তাহলে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে পুনঃরায় ব্যবহার করা যেত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সেতু কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালি ও অব্যবস্থাপনার কারণে যুদ্ধবিমানটিকে ভেঙে ফেলা হয়েছে যেটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।

আরেফিন মহীদ নামের একজন ফেইসবুকে লিখেছেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ এ ধরনের স্থাপনা চোখে দেখে বিমান  ভ্রমনের স্বাদ মেটান। বিশেষ করে এই যুদ্ধ বিমানটি দেখে শিশু মনে বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন তৈরি হয়। দৃষ্টি নন্দন পটুয়াখালী ইউনিভার্সিটি নির্দেশকের উপরে থাকা যুদ্ধ বিমানটি ভেঙে ফেলার নিন্দা প্রকাশের ভাষা নেই।

মোঃ রিয়াজুল কবির নামে আরেকজন লিখেছেন, “এটি এখন শুধু স্মৃতি। আমার ব্যক্তিগক মতামত। দৃষ্টি নন্দন পটুয়াখালী-বরিশাল সড়কে (পাগলা মোড়) ইউনিভার্সিটি স্কোয়ারের উপর যুদ্ধ বিমানটি এভাবে না ভেঙ্গে অন্যত্র স্থাপন করলে সাধারন মানুষ খুশি হত। এটি পুন স্থাপনের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করি। বিঃদ্রঃ বিমানটি অক্ষত রেখে হয়ত রাস্তা সংস্কার করা যেত, তাহলে  হয়ত দেশের এই সম্পদটি অন্যত্র কোন এক জায়গায় মাথা উচু করে দাড়িয়ে থাকত।”

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।